এখানে আসার পর থেকে ভোর হতে খুব কম-ই দেখেছি। ঘুমোতে যাওয়ার সময় ক্রমঃশঃ গভীর থেকে গভীরতর রাতের দিকে সরতে থাকে আর সেই সঙ্গে পিছোতে থাকে ঘুম ভাঙার সময়। এইভাবে পিছোতে পিছোতে যখন ঘুমোতে যাওয়ার সময় ৬:৩০ পার করল, আমি এখানে ভোর হওয়া দেখলাম।
নেশাতুর রাত আড়ামোড়া ভেঙে জেগে উঠল। প্রত্যেক জায়গার ভোরের নিজস্ব একটা গন্ধ থাকে, সেই গন্ধ নাকে এল। মনে পড়ে গেল, দেশগাঁয়ে যখন বেড়াতে যেতুম, তখন ঘুম ভাঙার পর কতকটা এমনই গন্ধ নাকে আসত। মশারি ফাঁক করে, পা-টা নামিয়ে হাওয়াই চটি খুঁজতাম আর ক্রমশঃ স্পষ্ট হয়ে জেগে ওঠা লোকজনদের কলতান।
আমাদের হস্টেল-এর ছাদে এসে দাঁড়ালে এমনিতেই মনটা ভালো হয়ে যায়। একদিকে সারি সারি ধোঁয়া ঘেরা পাহাড়; অন্যদিকে বিশাল একটা লেক। লেকের অন্যপাড়ে সদাজাগ্রত শহরের রাস্তায় গাড়ীগুলো বিন্দুর মত সরে সরে যায়। তার-ও পেছনে দেখা যায় বিমানের ওঠানামা। সামনের দিকে আছে লেক এর চড়া আর তার-ও পেছনে জনপদ। ঝাঁ-চকচকে শহরের সাথে তার পার্থক্য চোখে পড়ার মত। সেই পার্থক্য কেন জানি না, বারবার আমার পাড়াগাঁ-এর কথা মনে পড়িয়ে দেয়।
পাখির আনাগোনা শুরু হয় আস্তে আস্তে। হস্টেলের ঘুলঘুলি থেকে পায়রাগুলো বেরিয়ে পড়ে। কোকিল আর কাক ডাকতে শুরু করে এক-ই সাথে। মাটিতে শালিখ চরে বেড়ায়। টিভির তারে বসে ফিঙে লেজ দোলায়। দোয়েলরা গল্প করে। দূরে লেকের চরে বসে থাকা বকগুলিকে মনে হয় ছড়িয়ে থাকা সাদা পালক। লেকের উলটোদিকে আছে একটি পাঁচতারা হোটেল।তার সবকটা ঘরেই নীল পর্দা। সেগুলি একইরকম থাকে। কতকগুলি গরু চরতে আসে লেকের চরে। বকগুলি ঘিরে ধরে তাদের। কুকুরগুলো খামোখা মস্করা করে গরুগুলিকে তাড়িয়ে বেড়ায়।সামনে আমার প্রিয় জনপদে শুরু হয় মানুষের আনাগোনা।
ক্রমশঃ রোদ বাড়ে, আমি ফিরে এসে ঘুমোতে যাই।
2 comments:
amazing picture and blog visit us for disscount andaman holiday packages
THANKS FOR SHARING THE CONTENT
Beach hotels in Portblair
Beach hotels in Havelock
Post a Comment